গত ২৮শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭ টার সময় নোয়াখালীর সেনবাগ থানার কানকিরহাট বাজার থেকে ২৩ জন ১৮-২২ বছর বয়সী ছেলেকে থানায় নিয়ে যায় সেনবাগ থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ
গত ২৮ সেপ্টেম্বরে স্কুল কলেজ পড়ুয়া কিছু তরুণ স্থানীয় কলেজ মাঠে, কিছু কলেজ সংলগ্ন রাস্তায়, কিছু দোকানে বসে যার যার মত করে সহপাঠীদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো। দিনটি হাটের দিন হওয়ায় সবাই নিজেদের পারিবারিক বাজার সদাই করতে গিয়ে বন্ধুদের সাথে একটু আড্ডা দিচ্ছিলো। ঠিক সেই সময় সেনবাগ থানা পুলিশের একটি টিম কলেজের সামনে এসে সবাইকে ডেকে একসাথ করে। সেনবাগ থানার অফিসার-ইন-চার্জ বদিউল আলম তাদের উদ্দেশ্যে বলে "তোমাদের সাথে আমাদের একটা মিটিং আছে। তোমরা সবাই আমাদের সাথে থানায় চলো" পুলিশের কথা শুনে কেউ কেউ থানায় যেতে অস্বীকৃতি জানালে তখন পুলিশ বলে, "আরে তোমরা কি কেউ কোনো অপরাধ করছো নাকি? তোমরা তো ভালো ছেলে। তোমরা ভয় পাচ্ছো কেন থানায় যেতে? আমরা তোমাদের কিচ্ছু করবো না" পুলিশের কথা শুনে সবাই থানায় যায়। থানায় যাওয়ার পরে পুলিশ তাদের ছবি তুলে কিশোর গ্যাং পরিচয় দিয়ে মিডিয়া ও ফেইসবুকে পোস্ট করে। পরে সবাইকে নিজ নিজ পিতা মাতার কাছে কল দিতে বলা হয়। পরে তাদের পিতা-মাতারা এসে তাদেরকে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য যে, এই ২৩ জনের মধ্যে ২২ জনই হচ্ছে ছাত্র। এই ২২ জন নোয়াখালী সরকারি কলেজ, কানকিরহাট কলেজ ও কানকিরহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ২ জন ছিল এসএসসি পরিক্ষার্থী। যারা কি-না কোচিং শেষ করে বাসায় যাচ্ছিলো। একজন কম্পিউটার কোর্স করে বাসায় যাওয়ার পথে পুলিশ তাকে ডেকে নিয়ে আসে। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও বিভিন্ন মিডিয়ায় বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা নেটিজনদের কাছ বিভিন্ন ধরনের কটু কথা শুনতে হচ্ছে। সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা জানান,"সেনবাগ থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ বদিউল আলম উচ্চ পর্যায়ে প্রশংসা পাওয়ার আশায় যাকে তাকে কিশোর গ্যাং বলে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।" শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, "আমাদের ছেলেরা কোনো বাজে কাজে জড়িত নেই। আমাদের ছেলেদের হয়রানি করা হয়েছে। আমরা চাই সেনবাগ থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ আমাদের কাছে তার ভুল স্বীকার করুক। সেইসাথে যেসকল মিডিয়া এই ভুল সংবাদটি প্রচার করেছে তারাও যেনো তাদের ভুল স্বীকার করে। " সম্প্রতি দেশে কিশোর গ্যাং এর প্রবনতা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশ বিভিন্ন স্থান রেইড দিচ্ছে। মাঝে মাঝে পুলিশ অনেক নিরঅপরাধ ছেলেদেরও থানায় নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে ভুক্তভোগী ছেলেটি সামাজিকভাবে মানসম্মান হারাচ্ছে। শুনতে হচ্ছে বিভিন্ন কটু কথা। তাই জনসাধারণের আহ্বান, যাচাই-বাছাই করে কিশোর গ্যাং ধরা হোক। আর কারো ছবি যেন প্রাথমিকভাবে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা না হয়।
Post a Comment